েফলে আসা শৈশব খণ্ড ঃ ২

অপূর্ব এক মুক্ত শৈশব আমার চেতনার অলিন্দে এসে বসে থাকে এই ভরদুপুরে । খুব প্রিয় ছিল ইস্কুলের সাদা শার্ট আর সাদা প‍্যান্ট । ইস্কুল এর ড্রেস পরাটা ছিল চূড়ান্ত উপভোগ্য বিষয় । ক্লাস এর গদ বাঁধা লেখা পরা ছাড়া আর সবই ছিল অসামান্য আনন্দের । বরিশাল জিলা ইস্কুল এর মাঠটাকে মনে হত তেপান্তরের মাঠ । ইস্কুল এ সব থেকে মন খারাপ করা জায়গা ছিল সাইকেল গ‍্যারেজ । ১০০ টার উপরে সাইকেল সার বেধে থাকত । একটা সাইকেল এর অভাব বার বার হতাশ করত । ইস্কুল এর সব থেকে অতি বিচিত্র ব‍্যাপারটা যেটা ছিল সেটা হলো, বর্ষার দিনে ইস্কুল এর সব কয়টা মাঠ পুকুর এ পরিনত হত । মাঠ গুলি সব বিচিত্র ভাবে মাঝখানে ঢালু । তখন কোমর সমান পানি জমে যেত আর সেই কোমর পানির পুকুর এ সারা বর্ষা পানি জমে থাকত । ব‍্যাপারটা এখনো আমার কাছে অস্পষ্ট যে সেই পুকুর এ কোত্থেকে জেনো ঝাঁকে ঝাঁকে তেলাপিয়া মাছ ঘুরে বেড়াত । আমি কৈ, শোল আর মাগুর মাছ ও পোনা সহ ঘুরে বেড়াতে দেখেছি । প্রতিদিন টিফিন এর কিছু অংশ অতিঅবশ্যই আমি সেই কৈ তেলাপিয়ার পেছনে উতসর্গ করতাম । হয়তো কোন একঘেয়ে ক্লাসে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে ছিলাম সেই শান্ত টলটলে জমে থাকা পানির দিকে। বাইরে বাতাস বয়ে গেলেই গাছ থেকে ঝড়ে পড়ত পাতা সেই পানিতে। শুকন ঝরা পাতা টলটলে পানিতে ভেসে বেড়াত সেদিক সেদিক। তারপরে হয়তো পানি থেকে মাথা বের করে দেয়া এক গোছা ঘাসের ফাঁকে আটকে যেত। দৃশ্যপটে ছেঁদ পড়ত শিক্ষকের চিৎকারে অথবা সবাইকে ব্ল্যাক বোর্ডের দিকে তাকানর নির্দেশে। একবার আমি কিছু তেলাপিয়ার পোনা ধরে বাসায় পানির বোতল এ ভরে রেখে ছিলাম । ইস্কুল এর জমে যাওয়া সেই পানিতে নামা ছিল আইনত দন্ডনীয় । যেহেতু মাঠ গুলি ছিল ব্যবহার এর অনুপযোগী তাই ইনডোর গেইম এর দিকেই আমাদের মনোনিবেশ করতে হত । আমাদের সবার প্রিয় ইনডোর গেইম ছিল বোম্ববাস্টিং । অাহ! বল ছুড়ে মারতেই সকল আনন্দ নিহিত ছিল যেন । ইস্কুল এর শেষ পিরিয়ড টা যেন কোনভাবেই শেষ হত না । শেষ বিকেলে যখন হেঁটে হেঁটে বাড়ির পথ ধরতাম তখন একটা ইটের টুকরোকে সারাটা পথ কিক করতে করতে বাড়ি ফিরতাম । এটা িছল একটা দুর্দান্ত আনন্দদায়ক প্রক্রিয়া । ইটের টুকরোটা রাস্তা থেকে ছিটকে গেলে গেম ওভার । ফিরতি পথে একটু সামনে হাটলেই পুলিশ লাইন । পুলিশ সদস্যদের বৈকালীন খেলাধুলা – কসরত দেখার জন্য মুগ্ধতা নিয়ে থমকে যেতাম কিছুটা সময়ের জন্যও হলেও । আরেকটু আগালেই বাংলা বাজার । সব কিছু পেনে ফেলে আরেকটু এগিয়ে যাই সেই পুরানো ব্রিটিশ আমলের বাড়িটিতে । যার ঠিক পেছনেই প্রায় পাখির বাসার মত আমদের দোতলা বাড়িটি । ….

 

_________________________________________

আমার বাংলা বানান এবং টাইপিং দুরদান্ত দুর্বল।
এ ব‍্যাপারে সহযোগীতা করতে না পারায় আন্তরিক ভাবে দুঃখীত।

Share your thoughts