নগর পথে খণ্ড: ১
চোখ দুটি একবার খুলি আরেকবার বন্ধ করি ….. গাড় অন্ধকারে খুব সাবধানে কান পাতি । অবাক হয়ে শুনি একটা নদীর বয়ে যাওয়ার এলোমেলো ঢেউএর শব্দ । কি জানি কি হলো, সব ফেলে মন কোথায় পড়ে থাকে । এই বিবর্ণ নগরএ আর যেন এক মুহূর্তও নয় । এই শহরের মানুষ গুলির কি কোনো কিছুর প্রতিই সামান্য মমতা বা ভালবাসা নেই? সবুজ বন শেষ করে দিয়েছে, শেষ করে দিয়েছে শিশুদের খেলার মাঠ আর বুক ভরে টেনে নেয়ার নির্মল বাতাস । ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য যে অসামান্য প্রস্তুতি নেয়া দরকার তেমনি ঘরে ফেরার জন্য ঠিকই পথে পথে ঘুরতে হয় । কেউ কারো দিকে এক পলক ও তাকায় না যেন । কিন্তু ঠিক এ একজন আরেকজন ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছি । কি যে অবিরাম অন্ধকার এক পথ চলা ! প্রতি মুহুর্তে কে যেন কানের পাশে খুব শীতল গলায় চীৎতার করে স্মরণ করিয়ে দেয় “নির্বোধ তুমি দৌড়াও …. দৌড়াও ….” এখানে আমি বড় নিঃস্ব আর ক্লান্ত ।
জানালায় দঁাড়িয়ে দেখি একটা রং উঠা ছেড়া খোঁড়া বামন আকাশ । সবুজ ঘাস গুলিকে মানুষ এত বেশি ঘৃনা করে যে সেগুলি এই শহরের বুক থেকে চিরদিন এর জন্য দূর করে ফেলেছে । কতদিন দেখিনি ঘাসের বেড়ে উঠা আর ঝোপের আড়ালে লুকানো চড়ুই পাখির বাসা । কিছু একটা মোহ আছে হয়ত এখানে, যার টানে এখানে মানুষ ল্যাম্প পোস্ট, টার্মিনাল আর ডাস্টবিনেও ঘুমায় । সেই মোহের নাম হয়তো জীবিকা বা জীবনের তাগিদ । তাহলে আমাদের জীবন কি এতই নোংরা আর স্বার্থপর যে যার কারনে আমরা ভুলে গেছি জীবনের মানে !
খুব সন্তপর্নে সময়ের হাতে সময়কে ছেড়ে দিয়েছি যেন । নিস্তরঙ্গ জীবন ট্রাফিক সিগনালএ আটকে থাকা গাড়ির তীব্র হর্নে মাঝে মাঝে শুধু চমকে তাকায় ।