ফরেস্ট লন (চিঠি – ৩)
প্রিয় জয়ন্তী,
সাউথ পার্কের ফরেস্ট লনের উঁচু তিন তলা উইন্টার হোমের বাইরে আজ বিকেল গড়িয়ে যাচ্ছে। হালকা বরফের পাতলা আস্তরে ঢেকে আছে সবকিছু। এখনে শীত এর সময়টা খুবই বিচিত্র। মাঝে মাঝে হালকা বরফ পড়ে, আবার ২-১ দিনের মধ্যেই এই বরফ সরে গিয়ে হলদে ঘাস দেখা দিবে। আমি আনমনে দাঁড়িয়ে ভাবছি শেষ কবে এই লনে এসেছিলাম আমি। কতগুলি শীত যে এলেবেলে পেড়িয়ে গেছে।এখানে অনেক স্মৃতি আমার। বেঁচে থাকার অনেক অনুপ্রেরণা। পাতা ঝড়া বসন্তের অনেক বিকেল পেরুনোর গল্প। অনেক অলস সকালের সূর্যের কাছ থেকে লুকিয়ে ঘুমিয়ে থাকা। দোতলার ঘুল ঘুলি জানালা গুলি বন্ধ। পার্কিং পোচর্ে ফায়ার প্লেসের আগুন জ্বালানোর কাঠ গুলিও জড়ো করা নেই। লাল ইটের গা বেয়ে শীতে নিস্প্রান কালচে শেওলা গুলি মলিন হয়ে আছে।
সহজেই অনুমান করে নেই শীতের এই দিন গুলিতে এখানে তুমি আর আসোনা। আমার চোখ গুলি স্মৃতির দূরবীনে চোখ রেখে বয়ে যাচ্ছে সময়ের নদীতে। কোনো এক শীতের রাতের ফায়ার প্লেসের মৃদু উষ্ণতা ছুঁয়ে তোমার একাকিত্বের জানালায় উঁকি দেই। কিছুটা হতাশা আর দন্ধ নিয়ে আমি ভেবে অবাক হই, আমার এলোমেলো জীবন তোমাকে বঞ্চিত করে চলেছে প্রতিনিয়ত। কি যেনো কিসের খেয়ালে তোমাকে ভুলে থাকছি সারাক্ষণ।
ছোট দরজাটা বাইরে থেকে আটকানো। চাবি নেই আমার কাছে। দোতলায় যেতে ইচ্ছে করছে। দোতলায় মিউজিক স্টেশনটা চালু করে সোফায় কম্বল মুড়ি দিয়ে ডুবে থাকতে ইচ্ছে হচ্ছে। একটু দূরে সাদা ভিলার সাদা জানালায় চোখ পরে যায়। টানা পর্দার ওপাশে আলো জ্বলছে। একটা অবয়ব যেনো সরে গেল ওপাশ থেকে।