েফলে আসা শৈশব খণ্ড ঃ ৩
ঠিক কবে লেখাপড়া ব্যাপারটা শুরু করে ছিলাম সেটা আর দিন ক্ষণ গুনে মনে নেই। তবে এটা খুব সত্য যে পরালেখা ব্যাপারটা কখনই আনন্দ দায়ক ছিল না বৈকি। আজ ৩/০৮/২০১১ তে দিন ক্ষণ গুলে লেখা পরার পাট চুকিয়ে ফেলছি। বরাবরই নিরানন্দ এই প্রহসন এর সমাপ্তি টানায় মনের গহিনে কোথায় যেন একটা অনন্ত ছুটির ঘণ্টা বেজে উঠলো। নিয়ম – শৃঙ্খলা, অনুশাসন, অর্জন – বিসর্জন আর প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড় থেকে চীর মুক্তি লাভের এই আনন্দ যেন কোনো কিছুর সাথে তুলনীয় নয়। আজ আর থাকছেনা কোনো পরীক্ষার তাড়া কিংবা হাজিরা টানার নিদারুন ক্লান্তি। এখন শুধু শান্তি শান্তি আর শান্তি।
আমার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ২ শ্রেণী থেকে। যেকোনো কারণেই হোক ১ম শ্রেণী আমি কোনো রকম পড়া লেখা ছাড়াই পাশ। দাদা বাড়িতে বাবার প্রতিষ্ঠিত পূর্ব অান্দুয়া দাখিল মাদ্রাসায় আমার শিক্ষা জীবনের সুচনা হয়। ততকালীন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষিকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে ছিল আমার মা, চাচা ও ফুপুরা। শুধুমাত্র স্কুলের পরীক্ষা গুলির সময়ে আমি অবাক হয়ে আবিষ্কার করতাম আমার পরিবারের তথাকথিত সদস্যরা (শিক্ষকেরা) আমাকে চিনতে পারছে না। এই ব্যাপারটা আমি দাদা ও দাদির কাছে নালিশ করেও কোনো কূল কিনারা করতে পারিনি।
শৈশবের ওই সময়টার একটা স্মৃতির কথা বলছি: অান্দুয়ার সেই বাড়িতে আমাদের ২ ভাই বোনকে পড়তে বসানোটা যেন এক বিশাল আনন্দ যজ্ঞ ছিল। উঠানএ একটা বিশাল মাদুর পাটি বিছানো হত মাঝখানে হারিকেন জ্বালিয়ে রাখা হত। সবাই মিলে পড়তে বসতাম। স্কুলে যে যেই বিষয়ে পড়াত বাড়িতেও সে সেই বিষয় এ পড়াত। পুরো ব্যাপারটা ছিল একটা আনন্দ যজ্ঞ যেন। কিছুক্ষণ পর পর বাড়ির কেউ না কেউ এসে বাপক উৎসাহ দিয়ে যেত। হারিকেন এর আলোর একটু দূরেই পুরো পৃথিবী যেন নিকষ অন্ধকারে গ্রাস করে থাকত। আলোর বাইরে তাকাতেই যেন ভয়ে গা শিউরে উঠত। মাথার উপরে জ্বলে থাকত আকাশভরা তারা। আর কখন যে ঘুমিয়ে পরতাম তা আর মনে পড়ে না।
_________________________________________
আমার বাংলা বানান এবং টাইপিং দুরদান্ত দুর্বল। এ ব্যাপারে সহযোগীতা করতে না পারায় আন্তরিক ভাবে দুঃখীত।